বাগমারা হাসপাতালে না বসে করেন ব্যবসা, রুগী পাঠিয়ে দেন নিজস্ব মালিকানাধীন হাসপাতালে!

-অনলাইন ডেস্কঃ
হাসপাতালে না বসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিযোগসহ নানা অপকর্মের একাধিক অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা ২০ শয্যার হাসপাতলের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রবিউল আলমের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সম্প্রতি কুমিল্লার সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উল্লাহ।

সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট লালমাইয়ের নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে কোভিড পরিস্থিতি, ৭ তারিখ টিকা প্রদান কার্যক্রম, নমুনা সংগ্রহ ও বাগমারা ২০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ভর্তি নিয়ে এবং লালমাই উপজেলার স্বাস্থ্যবিভাগের নিরাপত্তার বিষয়ে আবাসিক কর্মকর্তার কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালীন রবিউল বিনা অনুমতিতে সভাকক্ষে ঢুকে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউলকে বাইরে অবস্থান করতে বলেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সভা শেষে আবাসিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উল্লাহকে গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করেন রবিউল। হাসপাতাল কক্ষে মিটিং করা নিয়ে ক্ষিপ্ত হন রবিউল। এছাড়া হাসপাতালে এত রোগী কেন ভর্তি করা হচ্ছে তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি সরকারি হাসপাতালের রোগী তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেন। ২৮ জুলাই কোভিড রোস্টার হওয়ার পর থেকে দায়িত্বে অবহেলা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র আরও জানায়, হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করে বাগমারা বাজারে ডা. মো. রবিউল আলম নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখে আসছেন। বাগমারা বাজারে তানহা মেডিকেল হল, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ আরও একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। তাছাড়াও কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজে পিপলস হসপিটাল নামে একটি হাসপাতালে মালিকানা রয়েছে তার। তার চেম্বারের কক্ষটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ওই চেম্বারে প্রিমিও গাড়িতে করে যাতায়াত করেন তিনি। এছাড়া বাগমারা ২০ শয্যার হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে কারও অনুমতি না নিয়েই নিজের শ্যালককে বসিয়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি হাসপাতালে বেপারোয়া আচরণ করছেন। হাসপাতালটিতে লালমাই ক্লাব ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিজেন ফ্লো মিটার প্রদান করে। কিছুক্ষণ পর রবিউল স্ট্যাটাস দিয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে লালমাই ক্লাবকে অভিনন্দন জানায়। এতে হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত এক সংকটাপন্ন রোগী ভর্তি ছিলেন হাসপাতালটিতে। গত ৪ আগস্ট ওই রোগীটির অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৪৩-এ গিয়ে ঠেকে। হাসপাতালের চিকিৎসক দুর্লভ কান্তি পাল ওই রোগীটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা ওই রোগীকে বাড়তি একটি সিলিন্ডার লাগিয়ে জরুরি বিভাগের বিছানায় অবস্থান করে। রাত ৯টার সময় অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। এরপর রোগীর দুই মেয়ে অসংখ্যবার রবিউলকে অনুরোধ করলেও তিনি ওই রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা বিষয়টি অবগত হয়ে ওই রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিলেও কিছুক্ষণ পর রোগীটি মারা যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রবিউলের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয় মৃতের স্বজনরা।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া অক্সিজেন সিলিন্ডার বেহাতসহ নানামুখী অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রবিউল আলম বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা কোনো অভিযোগই সঠিক নয়। আপনারা সরেজমিন এসে পরিদর্শন করুন। তারপর সব ঘটনা বুঝতে পারবেন।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, রবিউলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা প্রাথমকিভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করব। সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে তদন্ত কমিটি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তথ্যসূত্রঃঃ সাপ্তাহিক আমোদ

     আরো পড়ুনঃ

পুরাতন খবর:

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১